জীবন ধারা পরিবর্তন -ফ্যাটি লিভার নিরাময়
জীবনধারা পরিবর্তন – ফ্যাটি লিভার নিরাময়ে।
সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম-হাঁটাহাটি, পর্যাপ্ত ঘুম ও সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আপনি যে কোনো ধরনের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেন।
নন কমিউনিকেবল ডিজিজ হলো সেই রোগগুলো যে রোগগুলো একজন থেকে আরেকজনে ছড়ায় না, অর্থাৎ ছোঁয়াচে না। এই ধরনের রোগগুলোকে অসংক্রামক ব্যাধি (Noncommunicable diseases, or NCDs) বলা হয়।
আমরা সবাই সবকিছুই জানি কিন্তুু জীবনাচরণে তেমন কিছুই মানি না। আপনার নিজের অবহেলার জন্য আপনি আপনার আপনার পরিবারের সদস্যদের কষ্ট দিতে পারেন না।
আপনার খাবার নিয়ন্ত্রণ করতে আপনি নিজেই সচেষ্ট হউন ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহন করুন এবং নিরাপদ জীবন যাপন যাপন করুন।
সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, হাঁটাহাটি, দিনে ৭/৮ গ্লাস নিরাপদ পানি পান, শর্করাজাতীয় খাবার কম গ্রহন করতে পারে অনেক রোগের নিরাময়।
ফ্যাটি লিভার কি, কেন হয়, প্রতিকার কি?
“ফ্যাটি লিভার” একটি নন কমিউনিক্যবেল ডিজিজ
লিভার ডান দিকে থাকে বিধায় ডান দিকে হালকা হালকা পেইন অনুভব করেন।
ফ্যাটি লিভার হলে মাথাব্যথা, মন খারাপ ও ডিপ্রেশন, আচমকা কাঁপুনিসহ নানা উপসর্গ দেখা দেয়।
অপ্রত্যাশিত দুর্বলতা, অসময়ে ঘুম পাওয়া, দিনের বেলায় কাজের সময়ে ঘুৃম পাওয়া, খাবার একটু খেলেই পেট ভারি ভারি লাগা ইত্যাদি এই রোগের লক্ষণ।
লিভারে প্রয়োজনের অতিরিক্ত চর্বি জমে যাওয়ার ফলে এই রোগের উৎপত্তি হয়। ফ্যাটি লিভার হলে একজন মানুষ তিনি যেই বয়সেরই হউন না কেন তিনি একটা স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পরে যান। লক্ষণগুলো সাধারণত খালি চোখে দেখা যায় না। লুকায়িত থাকে। রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করলে তখন মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পরে যান একজন রোগী। লিভার সিরোসিস হলে তখন অনেকটা ক্ষতি হয়ে যায়।
প্রাথমিক অবস্হায় এই রোগ ধরা পড়লে, এই রোগের নিরাময় সম্ভব হয়। এজন্য প্রতিটি স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের রেগুলার হেলথ চেক আপ, রক্তের পরীক্ষা করা ও আলট্রাসাউন্ড করা প্রয়োজন৷
প্রতিকার
সাদা চিনি ও চিনিযুক্ত যেকোনো খাবার যেমন শরবত, জুস, সেমাই, পায়েশ, পুডিং মিষ্টি ইত্যাদি এগুলো পরিহার করা প্রয়োজন। বাড়তি চিনিই ট্রাইগ্লিসারাইড হিসেবে যকৃতে জমা হয়। যে কোনো ধরনের, ভাজাপোড়া খাবার, ফাস্ট ফুড এবং তেলে ভাজা যেকোনো ধরনের ফ্রাই এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার পরিহার করা প্রয়োজন।
যাঁরা দোকানের খাবার খান এবং অনলাইনে অর্ডার করে খাবার কিনে এনে খান তাঁরা এই স্বাস্থ্যঝুকির মধ্যে বেশী আছেন। যে কোনো বয়সী ছেলে – মেয়েরা এই ঝুঁকিতে আছেন।
ফ্যাটি লিভারের বিভিন্ন ধরনের ধাপ রয়েছে, আপনার সেই ধাপ অনুযায়ী ঔষধ সেবনের পরামর্শ অবশ্যই ডাক্তারগনের কাছ থেকেই নেওয়া প্রয়োজন৷ বেশী শরীর খারাপ হলে (লিবার সিরোসিস) হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
যেসব খাবার সাধারণত লিভার পরিষ্কার রাখে
লেবুর থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। লেবু পানি পান করুন অবশ্যই লেবুর শরবত নয়।
জলপাই সিদ্ধ করে খান। এর উপকারিতা নানাবিধ ।
লবন পরিহারযোগ্য।
আপেল, বাদাম, ব্রকলি, রসুন, গ্রিন টি, সবুজ শাক-সবজি ফাইবার যুক্ত ও দই ( মিষ্টি দই অবশ্যই নয়) খাদ্যতালিকায় রাখবেন। গবেষকরা বিশ্বাস করেন যে দই রক্তে চর্বির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে, লিভারে চর্বি জমা কমাতে এবং লিভারের ক্ষতি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে।
আপনার কাজের টাইপ (নিয়ম) যদি বসে বসে হয় থাকা হয় তাহলে কাজের ফাঁকে ফাঁকে একটু হাঁটুন। অফিসে ফোনে কথা বলার সময় হাঁটাহাঁটি করে কথা বললে, যেন অন্য কোনো কর্মকর্তার সমস্যা না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।
আপনার ২৪ ঘন্টার দিন ও রাত্রির থেকে নিয়মিত সময় বের করে একঘন্টা হাটাহাটি ও ফ্রি হ্যান্ড ব্যয়ামের জন্য রাখা প্রয়োজন।
আপনারা অনেকেই আপনার স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে জানেন, কিন্তু তারপরেও মজা করে খাবারের লোভে খেয়ে ফেলেন অনেক কিছুই ।
পুষ্টি মান বজায় রেখে রান্নাবান্না করুন এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন।
লুবনা ইয়াসমিন
Lubna Yeasmin
Advocate and Public Health Professional.
Accredited Mediator
Head of Public Health, Nutrition and Research Cell
International Chapter
South Asian Lawyer’s Forum (SALF).
Former Researcher
Law Commission, Bangladesh